খাই খাই হোটেল ০১

খাই খাই হোটেল

26 শে ফেব্রুয়ারি 2017😊🛌🚵🧑🧑
দোতলা থেকে টেবিল-চেয়ার লেপ-তোষক বইপত্র গোছগাছ করা চলছে।
নিচে আমাকে ডাকার জন্য নেমে আসলো 23 বছরের যুবক। চোখে মুখে তার এজগতের হতাশা চিন্তা করছে কোথায় যাবে কি করবে নতুন জায়গা নতুন মানুষ কেমন হবে সব। হাজারো চিন্তা ঘুরেফিরে আসছে তার মনে।
এই মামা যাবেন?
কোথায় যাবেন?
কাজীপাড়া।
হ্যাঁ যাবো। কয় তলা থেকে নামবে আর কয় তলায় গিয়ে উঠাতে হবে।
দোতলা থেকে নামবে আর পাঁচ তলায় উঠাতে হবে। 
ঠিক আছে 500 টাকা দিতে হবে।
চলেন।

রিক্সা চালক দৌড়ে উঠে গেল দোতালায়। নামাতে শুরু করলো একে একে বিছানা বই টেবিল কম্পিউটার আরো কত কি। হঠাৎ করে যেন সবাই অনুভব করতে শুরু করল একটা জায়গা ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। শুধু অ্যাপার্টমেন্ট থেকে নয় যেন সবার মন থেকে। সবাই যেন নিস্তব্ধ।

যুবকের মন ভালো নেই। সে যেন ভাবছে অনেক দূরে চলে যাচ্ছে। সবাইকে ছেড়ে অনেক দূরে। বুকের মধ্যখানে যেন একটা মোচড় লাগছে। যদিও কেউ এখানে আপন ছিল না, তবুও কেন জানি কোথায় একটা টান।

সকল কষ্ট যন্ত্রণা বুকে চাপা দিয়ে, তবুও সে এগিয়ে চলল।

রিক্সায় মালামালের গাদার উপর উঠে বসে চুপ করে বসে আছে যুবক। তাকে বিদায় দিতে এসেছে তার অতি পরিচিত বড় ভাই নাজমুল। চোখ দুটো তার অশ্রুতে ছল ছল করছে। কিছুই বলতে পারছনা ছোট ভাইকে। শুধু এটুকু বলল যেখানে থাকিস ভালো থাকিস। আর পারলে আমাকে ক্ষমা করিস।

রিক্সাওয়ালাঃ মামা ধীরে ধীরে চলতে শুরু করলো। একটু একটু করে যেন সেই সিলিকন সিলভার রেইন দূর থেকে দূরে হারিয়ে যেতে থাকলো।
যুবক স্মৃতির পাতায় হাত রে খুঁজে বেড়াতে লাগলো, কোথায় ছিল শত ভালোবাসার সম্পর্ক সকলের সাথে । তারা কি ভুলে যাবে তোর সবকিছু!

হঠাৎ রিকশাওলা বলে উঠলো ডানে না বামে?

যুবক হঠাৎ সম্বিত ফিরে পেল। বলল ডানে।

রিক্সাওয়ালাঃ মামা বলছে,
মন খারাপ মামা?
না মামা মোটেও না।
এই ঢাকা শহরে কেউ আপন নয়। আজ এখানে কাল ওখানে নয়তো পরশু আবার সেই গ্রামে।
এখানে মায়া বাড়িয়ে লাভ নেই।

সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে রিক্সায় পৌঁছালো বারেক মল্লার মোরে।

রিকশা বাসার সামনে আসতেই তাকে রিসিভ করতে এলো নতুন সঙ্গীরা।
আসতে কোন সমস্যা হয় নাই তো।
কোন সমস্যা হয় নাই।

রিক্সাওয়ালাঃ মামা একে একে সব মালামাল পাঁচতলায় উঠতে থাকলো।
তুই কি ঘরে জায়গা খুবই কম। যেখানে পাঁচজন থাকার কথা সেখানে তারা সাতজন থাকতে চাচ্ছে।
কিভাবে থাকবে এই ছোট্ট ঘরে সাতজন। এটা ভাবতেই যুবক শিহরিত হয়ে উঠলো। এখন বিপদে পড়লাম।

ভাই আপনিতো বলেছিলেন এখানে পাঁচজন থাকবেন।
বলেছিলাম কিন্তু আর একজন চলে এসেছে ওকে তার বের করে দেওয়া যায় না।
আমাকে আগেই বলতেন।
রে হোক সমস্যা নেই সবাই মিলেমিশে থাকলেই চলবে।

কিন্তু কিছুতেই চোখের আর মন টেকে না সেখানে। প্রথমেই প্রতারণা। না জানি পরে কি হবে।

No comments